Syed Anas Pasha

Syed Anas Pasha

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড


সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করছেন হাইকমিশনার ড. সাইদুর,
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী ও সাবেক ব্রিটিশ এমপি বার্ণস
লন্ডন: লন্ডনে ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের লক্ষ্যেই বাংলাদেশের জন্মের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতির জনককে হত্যা করা হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মদদে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি নতুন এই শিশু রাষ্ট্রটিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার উল্টো পথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

বুধবার ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। হাইকমিশনার ড. সাইদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও দূতালয় প্রধান ও কাউন্সিলার এ কে এম শহীদুল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ এমপি ও সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের চেয়ার মাইক্যাল বার্নস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক চিফ এডিটর হারুন হাবিব, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাশেম, এম এ গণি, ব্যারিস্টার আনিসুর রহমান, বেগম খালেদা কোরেশীসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হঠাৎ করে হয়নি। এরজন্যে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল রাষ্ট্রের জন্যে জাতির দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রতিটি বাঁকেই নেতৃ্ত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রস্তুতি ও সাড়ে নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মের পর এই দেশটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলার সংগ্রাম শুরুর প্রারম্বেই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।

গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা মনে করেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতির মন থেকে এই মহাপুরুষকে চীরতরে মুছে ফেলবে। কিন্তু এটি যে কোনোদিনই সম্ভব নয়, তা এই জাতিই আবার বুঝিয়ে দিয়েছে ষড়যন্ত্রীদের।

৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তড়িৎ সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এদের চীরতরে নিশ্চিহ্ন না করলে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের ওপর বারবার আঘাত আসবে। সভাপতির বক্তব্যে হাইকমিশনার ড. সাইদুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশের অবহেলিত মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে বঙ্গবন্ধু আজীবন রাজনৈতিক সংগ্রাম করে গেছেন। ১৫ই আগস্টের ষড়যন্ত্র স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য থেকে দেশের মানুষের চোখ ফেরানোর জন্যেই করা হয়েছিল।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তারা দীর্ঘদিন পর হলেও তাঁর হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় বাস্তবায়ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রমও যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার তাগিদ দেন। আলোচনা শুরুর আগে জাতির জনক ও তাঁর নিহত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর পরপরই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

আলোচনা সভা শুরুর আগে দিনের শুরুতে হাইকমিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়। সকালে সাড়ে ১১টায় হাইকমিশনার, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী ও সাবেক ব্রিটিশ এমপি মাইক্যাল বার্ণস এক সাথে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণে অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, ১৬ আগস্ট, ২০১২
Link to Article

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts