Syed Anas Pasha

Syed Anas Pasha

বাংলানিউজ২৪.কম::::: যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমান উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র: বাংলাদেশি যুবক দোষী সাব্যস্ত

লন্ডন: ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমান উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের এক অভিযোগ ব্রিটেনের একটি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে বাংলাদেশি এক যুবক।
ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার শুনানিকালে বাংলাদেশের জেমমবি’র সঙ্গে আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদার যোগাযোগের এক চাঞ্চল্যকর তথ্যও বেড়িয়ে এসেছে।

সাউথ ইস্ট লন্ডনের উলউইচ ক্রাউন কোর্টে আগামী ১৮ই মার্চ এই অপরাধের দায়ে বাংলাদেশি যুবক রাজিব করিম এর শাস্তি নির্ধারণ করা হবে। বিবিসি ও গার্ডিয়ানসহ অন্যান্য ব্রিটিশ মিডিয়া সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্রাক্তন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার রাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আলকায়েদা নেতা আনোয়ার আওলাকীর নির্দেশে সে যুক্তরাষ্ট্রগামী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের নির্ধারিত বিমানটির কম্পিউটার সিস্টেম অকেজো করে তা উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছিল।

এই অভিযোগ ছাড়াও উলউইচ ক্রাউন কোটে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের আইটি সিস্টেমের বিস্তারিত তথ্য আওলাকীকে জানানোসহ আরো ৩টি অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আনা হয়।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নর্থ ইংল্যান্ডের নিউক্যাসেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার পর দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে রাজিবের বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ চার সপ্তাহ আদালত শুনানির পর গতকাল সোমবার বাংলাদেশি এই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।

শুনানিতে বলা হয়, রাজিব করিম ও তার ভাই তেহজিব করিম পরস্পর যোগাযোগ সাপেক্ষে এইসব ষড়যন্ত্র করছিল। তেহজিবও গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইয়েমেনে আলকায়েদা বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হন। আদালত শুনানীতে রাজিব ও তাঁর ভাই তেহজিবের সাথে জামায়াতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশে ইসলামিক শাসন কায়েমের নামে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অভিযোগে অভিযুক্ত এই সংগঠনটির শীর্ষ নেতা এরইমধ্যে উপরোক্ত অপরাধে মৃত্যুদন্ডে দত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। রাজিব আদালতে স্বীকার করেছে সে ও তাঁর ভাই তেহজীব বাংলাদেশের জেএমবি’র সাথে সম্পৃক্ত। আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী নেতা আনোয়ার আল আওলাকির ‘অনলাইন ফোরামে’র মাধ্যমেই তারা দুইভাই জিহাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। রাজিব ও তাহজিব এই দুইভাইয়ের সঙ্গে আনোয়ার আল আওলাকীর যোগাযোগ ছিল বলে আদালতে তথ্য  উপাত্ত উপস্থাপন করে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ৩১ বছর বয়সী বাংলাদেশি রাজিব করিম ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের ম্যানচেষ্টার ইউনিভার্সিটিতে ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করে। পড়াশোনা শেষে সে চলে যায় বাংলাদেশে। ঐ সময় বাংলাদেশে বসবাসকালীন সময়েই সে ইসলামিক চরমপন্থি সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। ২০০৬ সালে তাঁর ছেলের চিকিৎসার জন্যে রাজিব পুনরায় ব্রিটেনে ফিরে আসে।
কিন্তু পুলিশ ধারণা করছে মূলত ইসলামিক জেহাদী অনুপ্রেরণা থেকেই রাজিব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ভূমিকা রাখার ল্য নিয়েই ব্রিটেন ফিরে এসেছিল। ২০০৭ সালে রাজিব আইটি ট্রেইনি হিসেবে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে যোগদান করে। রাজিবের বাড়ির কম্পিউটারসহ অন্যান্য বিষয়ে দীর্ঘ  ৯ মাস তদন্ত শেষে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, রাজিব অত্যন্ত কৌশলে বিগত দিনে সংগঠিত ব্রিটেনের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে গবেষণা করেছে।

ঐ তদন্তে বেড়িয়ে আসে, সন্ত্রাসী নেতা আনোয়ার আওলাকী রাজিবের কাছে ইমেল করে জানতে চেয়েছেন ‘যুক্তরাষ্ট্রগামী কোন ফাইটে আমাদের মিশন নিয়ে কাউকে ঢুকানো কি সম্ভব?’। পুলিশ ধারণা করছে এই ইমেইলের উত্তরে রাজিব আওলাকীকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিস্তারিত তথ্য জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন। শুধু তাই নয়, ঐ সময় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কেবিন ক্রু ধর্মঘটের সময় নিজে কেবিন ক্রু হিসেবে ঢুকারও চেষ্টা করেছে রাজিব  ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে তা করতে সম হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১১
Link to Article

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts