Syed Anas Pasha

Syed Anas Pasha

Banglanews24.com: ::::: লন্ডনে কর্মীসভায় খালেদা জিয়া: ৩০ মে’র পর মধ্যবর্তী নির্বাচন আদায়ের আন্দোলন

লন্ডন: আগামী ৩০ মে’র পর মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে দুর্বার আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া।

রোববার কন্দ্রীয় লন্ডনের পার্ক লেইনের গ্রোজভেনর হাউসে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক কর্মীসভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি মিয়া মনিরুল আলমের সভাপতিত্বে কর্মীসভায় দীর্ঘ ৪৪ মিনিটের বক্তৃতায় বিরোধী দলীয় নেত্রী সর্বক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বলেন, ‘জনগণ দীর্ঘ আড়াই বছর এই সরকারকে সময় দিয়েছে। কিন্তু তারা জনগণের কোনও চাহিদাই পূরণ করতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে জনগণকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তার কোনওটাই পালন করতে না পারলেও বিদেশি শক্তিকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার সবগুলোই পালন করছে এ সরকার।‘

খালেদা জিয়া বলেন, ‘জনজীবনে আজ যে মহাসঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে হলে এই সরকারকে এখনই বিদায় করতে হবে। আর এজন্যই বিএনপি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।’

আর এ দাবি আদায়ে ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর পর সারা দেশ সফর করে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগে ষড়যন্ত্র করে নিজেদের পছন্দের আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগ এনে বিরোধী দলীয় নেত্রী বলেন, ‘বিএনপি ষড়যন্ত্রের কোনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানকে মেনে নেবে না।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দেশবাসীকে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। আর বিএনপি বলেছিল, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।’

২০০৮-এর নির্বাচনকে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন আখ্যা দিলেও বিএনপি চেয়ারপার্সন এ সময় কৌতুক করে বলেন, ‘দেশের মানুষ তখন হয়তো ডিজিটাল বাংলাদেশ শব্দের প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হয়েছিল। কিন্তু আজ প্রমাণ হয়েছে, আমরাই ঠিক বলেছিলাম। দেশ বাঁচানোই এখন প্রথম কাজ।‘

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অপশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ আমাদের বলছে কিছু একটা করুন। আমরা বলেছি কিছুদিন অপেক্ষা করুন। আমরা আওয়ামী লীগ কী জিনিস, জনগণকে তা বোঝানোর জন্যেই এ সরকারকে আড়াই বছর সময় দিয়েছি, আর নয়। এবার বিদায় নিতে হবে এই সরকারকে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের কোনও প্রতিষ্ঠানই আজ আর কার্যকর নেই। ’৭২ থেকে ’৭৫ দেশে এক দলীয় শাসন ছিল, আর আজ দেশে চলছে এক ব্যক্তির শাসন। বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেকটি বিভাগই চলছে প্রধানমন্ত্রীর খেয়ালখুশিতে। পার্লামেন্টকে বাদ দিয়ে সংবিধান সংশোধনের নামে আদালতকে ব্যবহার করে যা ইচ্ছে তাই করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ চলছে সংবিধান ছাড়া। দেশে আজ বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, শেয়ার ব্যবসা নেই, আইন নেই, বিচার নেই, গণতন্ত্র নেই। শুধু নেই আর নেই। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা জনগণ। আমাদের সময় যে চালের কেজি ছিল ১৬ থেকে ১৭ টাকা, এখন সে চাল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি আজ সারা দেশকে করে তুলেছে এক বিভীষিকাময় রাজ্য।’

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন কর্মকা- আজ স্থবির। বিদ্যুতের অভাবে দেশের শিল্প কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর এগুলো পানির দামে কিনে নিচ্ছে প্রতিবেশী একটি দেশ।’

তিনি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, হত্যা, গুম এগুলো আজ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। র‌্যাবের পরিচয়ে আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা মানুষকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করে দিচ্ছে।’

শেয়ার মার্কেটের সাম্প্রতিক ধস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই শেয়ার মার্কেটে ধস নামে। শেয়ার মার্কেট ধসের কারণে দেশের ৩৩ লাখ পরিবারের দেড় কোটি লোক আজ রাস্তায় বসতে চলেছে।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, ‘তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে শেয়ার বাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের রক্ষায় সরকার উঠেপড়ে লেগেছে, অথচ যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো তাদের বিষয়ে সরকারের কোনও ভূমিকাই নেই।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশের সর্বগ্রাসী সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকার যুদ্ধাপরাধী বিচারের নামে দেশে চালাচ্ছে রাজনৈতিক কর্মীদের নির্যাতন।’

এ সময় তিনি নিজের ছেলেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বিদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় টাকা দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আর এর সূত্র ধরে আদালতকে ব্যবহার করে করা হচ্ছে মিথ্যা মামলা।’

এ সময় খালেদা জিয়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্টের বদলে আজ সব কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আদালতে। আদালতের ঘাঁড়ে বন্দুক রেখে সরকার তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।’



সরকারের বিরুদ্ধে ভারত তোষণ নীতির অভিযোগ

এ সময় তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রতিবেশী এই দেশটির করদ রাজ্য বানানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রধানমন্ত্রী তার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশ-ভারত যে চুক্তিগুলো করে এসেছেন, তা পার্লামেন্টে উপস্থাপনেরও প্রয়োজন মনে করেননি। ট্রানজিটের নামে ভারতকে করিডোর দেওয়ার চুক্তি করে, আবার চড়া সুদে তাদের কাছ থেকে আনা টাকা দিয়ে তাদেরই পণ্য পরিবহন সুবিধার জন্য রাস্তা করে দিচ্ছেন।‘

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে বিশ্বব্যাংক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ কেয়ার্টার পার্সেন্ট সুদে যে ঋণ আনে, ২০ বছর মেয়াদি সেই ঋণই আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের একটি ব্যাংক থেকে এনেছে ৪% সুদে।’

সীমান্তে বিএসএফ’র হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে খালেদা বলেন, ‘সীমান্ত আজ অরক্ষিত। আর এই সুযোগে বাংলাদেশ থেকে সার, পেট্রোলিয়ামসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী দেদারসে পাচার হচ্ছে ভারতে।  আর ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে ঢুকছে ড্রাগসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জিনিস।’

ভারত বাংলাদেশের জমিও দখল করে নিচ্ছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘নিজের জমিতে ফলানো বাংলাদেশি নাগরিকদের পাকা ধানও কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিএসএফ। অথচ সরকার কোনও প্রতিবাদ করছে না।’

বিডিআর‘র ৫৭ চৌকশ কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে দুর্বল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলীয় নেত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকা-ের ভালো মতো তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে এ আশঙ্কায় সরকার বিষয়টির ঠিকমতো তদন্তই করেনি।’

এ সময় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আজ বিপন্ন। এ সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। আরও বেশি সময় দিলে বাংলাদেশ নামে থাকলেও দেশটি প্রতিবেশী দেশের একটি প্রদেশে পরিণত হবে।’

ফখরুদ্দিন-মঈনকে তুলোধুনো
১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঠোর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনারা অনেকে এদের বলেন ১/১১ সরকার। আমি এটি বলি না। আমেরিকার ৯/১১ কে নকল করে ফখরউদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সরকার নিজেদের আগে এই চমকদার বিশেষণ লাগিয়েছে। ওই সরকার ছিল বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক ও দুর্নীতিবাজের সরকার।’

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘২০০৬ সালে সফলভাবে দেশ পরিচালনার পর আমরা সাংবিধানিক একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু বেঈমান জেনারেল মঈন অসাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সরিয়ে ফখরুদ্দিনকে ঠুঁটো জগন্নাথ হিসেবে সামনে রেখে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করে শত শত কোটি টাকা আদায় করেছে সে (মঈন) নিজে। আর দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে রাজনীতিকদের করেছে নির্যাতন।’

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘সে (মঈন) যদি দুর্নীতি নাই করতো তাহলে ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ছাড়লো কেন? শত অভিযোগ সত্ত্বেও আমরা তো তাঁর নির্যাতনে দেশ ছাড়িনি, তারেক তো দেশ ছাড়েনি?’


জেনারেল মঈন জিয়াউর রহমান হতে চেয়েছিল

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘বেঈমান জেনারেল মঈন ক্ষমতার মসনদে বসার স্বপ্ন দেখেছিল। জাগো বাংলাদেশ নামের সংগঠনও করেছিল।’

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘মঈন রাজনীতিক সাজতে চেয়েছিল, সে জিয়াউর রহমান হতে চেয়েছিল। কিন্তু যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতিতে জিয়ার আগমন ঘটেছিল, ক্ষমতার মোহে সেই ইতিহাস সে চর্চা করেনি। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যে বারোটা বাজিয়েছে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন, এর বিচার আইনের আদালতে হলে যেমন তারা চূড়ান্ত শাস্তি ভোগ করবে, তেমনি রাজপথে পড়লে জনগণের আদালতে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ অপরাধের শাস্তি পাবে। আর তাই আদালত বা রাজপথ কোনওটাই তাদের জন্যে নিরাপদ নয় জেনেই তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’

বর্তমান সরকার কক্সবাজার ষড়যন্ত্রের ফসল

খালেদা জিয়া বলেন, ‘ক্ষমতার শেষ দিকে শত নির্যাতনের পরও যখন আমাদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি, তখনই ফকরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন পালাবার পথ খুঁজতে থাকে। আর এই পথ করতে গিয়েই ষড়যন্ত্র হয় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার।’

 খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে কক্সবাজার ষড়যন্ত্রের ফসল উল্লেখ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ফকরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সরকারকে তাদের আন্দোলনের ফসল বলেছিল। এতেই প্রমাণ হয়, তারাই এদের ক্ষমতায় এনেছে। আর এর বিনিময়ে ফকরুদ্দিনের সরকার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে নিজেদের পালাবার পথ তৈরির ষড়যন্ত্র করে।’

২০০৮ এর নির্বাচনের আগমুহূর্তে কক্সবাজারে ফখরুদ্দিন, জেনারেল মঈন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের গোপন বৈঠকের তথ্য জানিয়ে খালেদা বলেন, ‘বিদেশি শক্তির পরামর্শে ওই বৈঠকেই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানতাম এই নির্বাচনে আমাদেরকে হারানো হবে। তবুও মঈনের সরকারের চেয়ে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন হলেও একটি নির্বাচিত সরকার ভালো, এই কথা মনে রেখে আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিয়েছিলাম।’

এ সময় তিনি ফখরুদ্দিন-মঈনের বিচার দাবি করে বলেন, ‘অপরাধ যদি তারা না করে থাকে, তাহলে পালালো কেন? সংসদীয় কমিটির সামনে হাজির হতেই বা কেন এত ভয়?’

কমর উদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধা, শফিক রেহমান ও সিরাজুর রহমানের প্রশংসা
বক্তব্যের শুরুতে খালেদা জিয়া সদ্য প্রয়াত যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি কমর উদ্দিনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি কর্মীদের জানান, আন্দোলন সংগ্রাম প্রশ্নে সর্বক্ষণ কমর উদ্দিন তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

সমাবেশে উপস্থিত বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান ও অনুপস্থিত সাংবাদিক সিরাজুর রহমানের নাম উল্লে¬খ করে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে খালেদা বলেন, ‘দেশের বর্তমান ভয়াবহ সঙ্কটে এ দুই সাংবাদিক ভয় ভীতি উপেক্ষা করে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে অবিরাম লিখে যাচ্ছেন।’

তিনি ‘৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় লন্ডনে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সংগ্রহেও এ দু’জনের অবদানের প্রশংসা করেন।

সমাবেশ মঞ্চে যুক্তরাজ্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিয়া মনিরুল আলম, সাবেক সভাপতি মহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

নিচে কর্মীদের সারিতে অবস্থান করছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শফিক রেহমান, উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আমীন ও সহ-সভাপতি শমসের মুবিন চৌধুরী।

এর মধ্যে শমসের মুবিন চৌধুরী, ড. ওসমান ফারুক ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু সমাবেশে বক্তব্যও রাখেন।

চরম বিশৃঙ্খলা ও সমন্বয়হীনতা

বিকাল সাড়ে তিনটায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও লন্ডন সময় বিকাল পৌনে ছয়টায় সমাবেশের কাজ শুরু হয়। শুরুতেই বিরোধী দলীয় নেত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান সদ্য প্রয়াত কমর উদ্দিনের ছেলে তানভির আহমেদ।

 তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত যুক্তরাজ্য বিএনপির বিবদমান দুগ্রুপের সেøাগান পাল্টা সেø¬াগানে সমাবেশের পরিবেশ ছিল অনেকটা উত্তপ্ত। এতে খালেদা জিয়াও ছিলেন বিরক্ত।

আর তাই বক্তব্যের শুরুতেই তিনি কর্মীদের সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষার উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে বিদেশিরা যেভাবে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলে, তা আমাদেরও শিখতে হবে।’

 বিবদমান দুগ্রুপের পাল্টাপাল্টি সেøাগান ও মাঝে মাঝে পেছন থেকে সামনের দিকে খালি পানির বোতল ছোঁড়াছুড়িতে সাংবাদিকরা যে কোনও সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছিলেন।

সাংবাদিকদের জন্যে নির্ধারিত আসনও দলীয় কর্মীরা আগেই দখল করে নিয়ে বসে পড়ায় অনেক সিনিয়র সাংবাদিক সমাবেশের এক কোণে গিয়ে অবস্থান নেন। সমাবেশ স্থলে ঢুকতেও সাংবাদিকদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে আটকে রাখা হয়। সমাবেশের সমন্বয়ে নেতৃবৃন্দের কোনও নিয়ন্ত্রণই ছিল না।

সাংবাদিকরা যখন এক কোণে বসে সমাবেশ শুরু হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন, তখন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিদুর রহমান এসে নির্ধারিত সিট দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি নিজেও আজ অসহায়’।

সাড়ে তিনটা থেকে এসে কর্মীরা অপেক্ষা করলেও সমাবেশ শুরু হয় পৌনে ছয়টায়। খালেদা জিয়া বক্তব্য শুরু করেন সন্ধ্যা ৭.৩৮ মিনিটে। একটানা তিনি ৪৪ মিনিট বক্তব্য রাখেন।

১৮ বছর পর লন্ডন সফর

১৯৯২ সালের পর এই প্রথম বিএনপি চেয়ারপার্সন ১ সপ্তাহের জন্য সফরে লন্ডন গিয়েছেন। এ সফরে  ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী ও ব্রিটেনের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা এড মিলিব্যান্ড, বিরোধী দলীয় উপনেতা হ্যারিয়েট হ্যারমেন, অল পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস কমিটির ভাইস চেয়ার বিশিষ্ট মানবাধিকার নেতা লর্ড এভিবারিসহ কয়েকজন ব্রিটিশ রাজনীতিকের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ কর্মসূচি এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।

হাউস অফ কমন্সে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রশ্নোত্তর সেশনও উপভোগ করার কথা রয়েছে বিরোধী দলীয় নেত্রীর। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি সাক্ষাতের চেষ্টা এখনও অব্যাহত আছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১১
Link to Article

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts